Wednesday, April 4, 2018

প্রতি বছর ক্ষতি হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা

ব্যাংকিং খাতে অদক্ষতায় বছরে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা। এ ক্ষতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশের সমান। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম’র (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিধান এবং সিআরআর (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা নগদ জমার হার) ১ শতাংশ কমিয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ করায় ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে।
সংবাদ সম্মেলনে সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ব্যাংক খাতে অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, ব্যাংকিং সেক্টরে একটার পর একটা ‘স্ক্যাম’ হচ্ছে, আমানতকারীরা এখন ব্যাংকে টাকা রাখতে বিশ্বাস পাচ্ছেন না। ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, অনাদায়ী ঋণ সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে। এটার বড় কারণ হচ্ছে, ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল নিয়ন্ত্রণ এবং যারা ঋণখেলাপি হচ্ছে তাদের কোনো শাস্তি হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতার অভাব, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা নেই; বর্তমান সময়ে অনেক ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে আমরা দেখছি, বাংলাদেশ ব্যাংককে বাইপাস করে। এটা কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংককে একটা সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে যে তার ভূমিকাটা কি? ব্যাংকিং সেক্টরের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের হওয়া উচিত, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখছি সেটা হচ্ছে না।’
নীতিগত বিষয়ে বড় ধরনের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি ‘ভুল’ এবং তা ‘রং সিগনাল’ দিচ্ছে মন্তব্য করে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এ দুটি সিদ্ধান্তই (সরকারি আমানতের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখা ও সিআরআর ১ শতাংশ কমানো) সঠিক উপায়ে নেয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি মেকিংয়ের ইউনিট আছে, তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে, এখানে আমরা কিন্তু তা দেখিনি। এ ধরনের বড় সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বাংলাদেশ ব্যাংকে বসে তা হয়নি, যা আশ্চর্যের বিষয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোর দাবির মুখে।
ড. সেলিম রায়হান আরও বলেন, ‘যে ব্যাংকগুলো এখন খারাপ পারফর্ম করছে, তাদের কাছে যদি আবার টাকা দেয়া হয়, সেই টাকারও অপব্যবহার হবে কিনা- তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অন্যদিকে সিআরআর আমানতকারীদের সেইফটি হিসেবে কাজ করে, সেখানে বড় ধরনের রেশিও কমানো সুবিবেচিত হয়নি।

No comments:

Post a Comment