Saturday, April 7, 2018

বিপজ্জনক খেলায় মেতেছেন সৌদি যুবরাজ

সৌদি আরবে প্রথা ভেঙে একের পর এক সংস্কার আনছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুর্নীতি বিরোধী অভিযান, ধর্মীয় সহনশীলতা, নারীর প্রতি উদারতা, তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শন, আঞ্চলিক রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকা ইসরায়েলের সঙ্গে হঠাৎ মৈত্রী, শত্রু দেশগুলোর প্রতি আরও কঠোরতা প্রদর্শন—এমন একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনায় তিনি। সৌদি আরবে বহু বছরের প্রথা ভেঙে নানান সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন সৌদি যুবরাজ। প্রশংসা তাঁকে হয়তো আরও বেশি বেশি সংস্কারে উদ্বুদ্ধ করেছে। তবে এর পরিণাম কি ভেবেছেন কেউ? এভাবে একের পর এক একক সিদ্ধান্ত স্বৈরতন্ত্র ও আঞ্চলিক যুদ্ধের পথ তৈরি করছে না তো! ইয়েমেন যুদ্ধে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে তাঁকে। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতার জন্য তাঁর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করা হচ্ছে।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বর্তমানে সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসক মনে করা হয়। ২০১৫ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর উত্থান ঘটে। গত জুনে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স (পরবর্তী শাসক) ঘোষণা করা হয়।
ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর থেকে তিনি একের পর এক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেন। দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ৩৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ আদায় করে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে আছেন ১১ প্রিন্স, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তিন দশকের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে ১৮ এপ্রিল থেকে দেশটিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হচ্ছে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নতুন সামাজিক চুক্তির কথা বলছেন, যেখানে আগের মতো স্থবির আমলাতন্ত্র থাকবে না।
তিনি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি প্রযুক্তিনির্ভর শহর স্থাপনের পরিকল্পনা কথা বলছেন, যেখানে নারী-পুরুষ অবাধে চলতে পারবে। আগামী জুন মাস থেকে সৌদি নারীরা গাড়ি চালনার অনুমতি পাচ্ছেন। সৌদি নারীরা এই প্রথম মাঠে বসে খেলা দেখার সুযোগ পেয়েছেন। একই সময়ে তিনি সৌদির ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা খর্ব করেন। এই পুলিশের অন্যতম কাজ ছিল-লোকজন প্রকাশ্যে চলাফেরার সময় নির্ধারিত পোশাক পরছে কিনা, বিশেষ করে মেয়েরা সেটা লক্ষ্য রাখা। খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের প্রতি আচরণসহ অন্যান্য বিষয়ে গোঁড়ামি কমিয়ে আনা ও আরও সহনশীলতা প্রদর্শন-এমন নীতিও পশ্চিমা বিশ্বে প্রশংসিত হয়।
যুবরাজ সালমান দেশটির প্রতিরক্ষা প্রধানকে সরিয়ে সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে নিয়ে আসেন নতুন ব্যক্তিদের। যুবরাজের মতে, সামরিক বাহিনীর জন্য বাজেটের ক্ষেত্রে সৌদি আরব বিশ্বের চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও সেখানে দক্ষ সেনার সংখ্যা অনেক কম।

No comments:

Post a Comment